আপডেট: 7th Jan, 01:39 PM
আজ ৭ জানুয়ারি। সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১৪ বছর। ২০১১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় ফেলানী। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর মরদেহ। গণমাধ্যমসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত।
তবে বিএসএফের বিশেষ কোর্টে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস দেওয়া হয় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে। সেই রায় প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’র সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে ফেলানীর পরিবার। কিন্তু ১৪ বছরেও সুষ্ঠু বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
ফেলানীর বাবা-মায়ের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কারণেই ফেলানীকে হত্যার বিচার পাননি তারা। তবে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের দরিদ্র নূরুল ইসলাম পেটের তাগিদে পাড়ি জমান ভারতে। পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের বঙ্গাইগাঁও এলাকায়। নূরুল ইসলামের বড় মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। ভারতের কাঁটাতার টপকে নিজ দেশে আসতে হবে তাদের। ৭ জানুয়ারি ছিল শুক্রবার। ভোর ৬টায় ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্তে মই বেয়ে কাঁটাতার টপকান ফেলানীর বাবা। পরে কাঁটাতার টপকানোর চেষ্টা করেন ফেলানী। এ সময় ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে বিদ্ধ হন তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে আধাঘণ্টা ধরে ছটফট করে কাঁটাতারেই ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। এরপর সকাল পৌনে ৭টা থেকে নিথর দেহ কাঁটাতারে ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা।
এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের এ কোর্টে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমীয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফের বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনঃবিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারো আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামি অমীয় ঘোষকে খালাস দেয়।
রায়ের পর একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনা শুরুর আগে শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি এখনো।
এদিকে মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম।
ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ফেলানী হত্যার ১৪ বছর হয়ে গেলো, এখন পর্যন্ত বিচার পাইনি। ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে বিচারটা নিয়ে গেলাম, কয়েকবার শুনানির তারিখ দিলেও তা পিছিয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে শুনলাম শুনানি হবে। তবে কবে হবে এর কোনো তারিখ পাইনি। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে ফেলানী হত্যার বিচার আটকে আছে। আমি আমার মেয়ে ফেলানীর হত্যাকারীর বিচার মরার আগে দেখে যেতে চাই।
একই কথা জানান ফেলানীর মা জাহানারা বেগম। তিনি জানান, অনেকবার মেয়ে হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। শেখ হাসিনা সরকার ভারতের বিপক্ষে লড়তে চেষ্টা করেনি। বর্তমান ইউনুছ সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মেয়ে হত্যার বিচার প্রার্থনা করছি।
স্থানীয়দের দাবি, ফেলানী হত্যার বিচার হলে কমতো সীমান্ত হত্যা। তাই দ্রুত এই বিচার করা দরকার।
কুড়িগ্রাম জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বজলুর রশিদ জানান, ভারতের মহামান্য সুপ্রিমকোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার রিট তালিকাভুক্ত রয়েছে। সেটি যত দ্রুত শুনানি হবে, ততই মামলাটির অগ্রগতি হবে। ফেলানী হত্যার বিচার হলে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকরাও সুরক্ষিত থাকবে।
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer Sekeleton Loader Sekeleton Loaer
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Skeleton Loader
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
Loading Sekeleton
আপনার মন্তব্য লিখুন